দিলীপ পাগলা। হালকা পাতলা গড়ন, বয়স ৪৫ কি ৫০ হবে। সেই '৯০ সালের দিকে ঢাকা
বিশ্ব বিদ্যালয়ের তুখোর ছাত্র ছিল। এরপর প্রায় পনের বছর ভবঘুরে হয়ে বেড়াত।
গত পাঁচ বছর আগে তাঁর নামে একটা চিঠি আসে। তারপর থেকেই পাগলামি শুরু। চিঠি
টা সে যক্ষের ধনের মত আগলে রাখত। কাউকে দেখাত না। একদিন চিঠিটা পাওয়া
গেল.........
প্রিয়েষু দিলীপ,
কেমন আছ, যদিও ভাল নেই, তবুও এটাই চিঠি লেখার নিয়ম, তাই লিখলাম। এতদিন ভুলেই ছিলাম। আজ কি এক অজানা কারনে তোমাকে মনে পড়ল, তাই লিখলাম। হয়ত প্রায়শ্চিত্ত! আজ আমাদের মাঝে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিইবা বাকি আছে।
মনে পড়ে সেই বিশ বছর আগের কথা? ভরা যৌবন, উন্মাদ, কলেজ ক্যাম্পাস, কৃষ্ণ চত্ত্বর, কফি হাউস।
আমরা ক'জন বান্ধবী মিলে তোমাকে ঠকিয়েছিলাম। নায়িকা ছিলাম আমি। আসলে সেটা প্রতরণা ছিল না, ছিল যৌবন বয়সের এক উন্মাদ খেলা, নারী জাতীর রহস্য!
আসলে আমি বা আমরা কেউই তোমাকে ভালবাসি নি। এমন কি তোমার জন্য আমাদের বুকে কোন মমতা ও ছিল না।
কলেজে তুমি ছিলে সেরা ছাত্র। সব সময় পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে। চেহারা ছিল আকর্ষণীয়, বাবার টাকা ও ছিল প্রচুর। নিজেকে নিয়ে খুব অহংকার করতে, কোন মেয়েকে কখনও পাত্তা দিতে না। এসবের কারনেই তোমার প্রতি হিংসা জন্ম নিল। তোমাকে ভালবাসার ফাঁদে ফেলতে লাগলাম।
চেয়েছিলাম তোমাকে নষ্ট করে দিতে। তুমি যাতে লেখাপড়া শিখতে না পার, যেন ভবঘুরে হও, সবাই তোমাকে ঘৃণা করুক। নারী জাতীর জয় হোক!!
আমি, প্রতিমা, বেলা, গোধূলী, ক্লাসে সবাই তোমাকে আকর্ষণ করতাম। চেয়েছিলাম এদের মাঝে কাউকে তুমি বেছে নাও। ঠাকুর!! শেষ পর্যন্ত আমাকেই বেছে নিলে!
একদিন ধরাও দিলে, উন্মাদ হয়ে আমার কাছে ভালবাসার কথা বললে। উদাস হয়ে থাকতাম, যাতে তুমি আরও এগিয়ে আস।
আমাকে বিশ্বাস করেছ সে জন্য খুব চাপা হাসি হাসতাম। আমাকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে বলেছিলে: রমা তোমাকে না পেলে আমি মারা যাব। আমার জন্য কেউ মরতে পারে এ কথা ভাবতেই মনে শিহরন জাগে। হায়রে পুরুষ! জীবন কখনও জীবনের সমতুল্য হয় কি!
তারপর কলেজ ক্যাম্পাসে সারাদিন আড্ডা, পড়াশুনো ফেলে চলে আসতে। কাড়িকাড়ি টাকা খরচ করতে। আমরা কিন্তু ঠিকই লেখাপড়া চালিয়ে যেতাম, বোকা দিলিপ!
তোমাকে কাবু করতে কিন্তু কষ্ট হত না। কৃষ্ণ চত্বরে বসে হাতে হাত, চোখে চোখ, একটু মধুর কথা, ব্যস নেতিয়ে পড়তে। ভগবান যদি নারী কে দেহ শক্তি না দিত তবে নারী আরও অসহায় হত। প্রেম ভালবাসা আসলে সবই এ দেহ। বুঝি না নারী দেহের প্রতি কেন তোমাদের এত দূর্বলতা!
তোমাকে নিয়ে আমরা খুব মজা করতাম, ঠাঁয় রোদে দাঁড়িয়ে রাখতাম, আর ইচ্ছে করেই দেরি করে আসতাম।তারপর বলতাম সরি, ব্যস সব ঠান্ডা। তোমাকে জোকার সাজাতাম., বলতাম আমাকে যদি ভালবাস তবে পুকুর থেকে শাপলা এনে দাও। বোকার মত তুমি তাই করতে। ভীষন ভালো লাগত।
এরপর পাশাপাশি বসা, হাতে হাত, নির্জনে গল্প, আমিই তোমাকে প্রথম চুমু খাওয়া শেখালাম, আবেগে জড়িয়ে ধরতে, বাধা দিতাম না। নির্জন দুপুরে গাছের নিচে বসে যখন প্রেমের কথা বলতে তখন আমার খুব হাসি লাগত, কিন্তু চেপে যেতাম।
অনেক দিন কেটে গেল, দুই দুই বার পরীক্ষায় ফেল করলে। ছোটখাট নেশা ধরলে, দেহের টানে আমার কাছে আসতে লাগলে, তোমাকে নিচ থেকে নিচে নামাতে লাগলাম।লেখাপড়া প্রায় ছেড়েই দিলে।আমাদের কথা তোমার বাড়িতে জানতে পেয়ে তোমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিল। ভবঘুরে হয়ে গেলে,মদ ধরলে,ছিনতাই ও করলে টাকার জন্য।
মিথ্যা অভিমান করতাম, পরে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে, ভীষণ ভালো লাগত। আমাদের ইচ্ছে পূরণ হয়েছে, তুমি নষ্ট হয়েছ।
মাঝে মাঝে মনে হয় এভাবে বেঁচে আছ কেন?মরে গেলেই তো পার।মনে ক্লান্তি এল, তোমাকে অসহ্য বোঝা মনে হল, সরে আসতে লাগলাম। কিন্তু তুমি ছাড়লে না। তোমাকে দেখিয়ে অন্য জনের সাথে প্রেম করতাম, যাতে তুমি আত্মহত্যা করো।
তুমি ভবঘুরে মাতাল হয়েছ, তাতে আমাদের খুশি হবার কথা, তবুও কেন জানি পাপবোধ হয়! কাঁচা বয়স, কিইবা বুঝতাম বলো!
সেই প্রথম যৌবনের কৌতুকের জন্য এক সময় নিজেকে পাপী মনে হত। তোমার জন্য কোন মমতা আমাদের মনে ছিল না, ছিল ঘৃণা! অথচ তোমার পতনের জন্য আমরা প্রত্যেকেই দায়ী। দীর্ঘ দিন তোমার সাথে দেখা নেই। এখন দেখলে হয়ত চিনতেও পারব না। আমারও আগের মত আর রূপ নেই। এখন দেখলে আর আবেগে চেয়ে থাকবে না। বলো, সেই বয়স কি এখনও আছে!
আমাদের সবারই বিয়ে হয়ে গেছে। আমিও বিয়ে করে আজ প্রবাসী। সময় বড়ই নিষ্ঠুর।আজ তুমি কোথায় আর আমি কোথায়। শুধুই স্মৃতি! সে দিনের সেই কৌতুক এখন ঘৃণা, বেদনা! অথচ সেই বয়সে কোন পাপবোধই হত না।
সংসারের নানা ব্যস্ততারর মাঝে এখনও সেই কৃষ্ণচত্ত্বরের কথা মনে পড়ে। সেই কাঁচা বয়স, কলেজ ক্যাম্পাস, আড্ডা ভীষণ মনে পড়ে। আজ হয়ত সেখানে নতুন জুটি বাসা বেঁধেছে। মাঝে মাঝে মনে হয় কি দরকার ছিল সে দিনের সেই কৌতুকের! সে দিনের সেই কাচা বয়সের একটা কৌতুক এত দুঃখ বয়ে বেড়াবে কে জানত।আমার যৌবনের কলঙ্কের জন্য তুমিই দায়ী! তুমিই!
এই চল্লিশের শেষ অংকে তোমার সাথে দেখা হলে হেসে বলব, চিনতে পারছ কি? মনে রেখেছ এখনও? ভুলে যাও! এখন কি সেই বয়স আর আছে!
আমরা কি পাপ করেছি? কিসের পাপ! পাপ কি এতই সস্তা! কি দরকার তোমাকে ভেবে, জীবন যেভাবে চলছে চলুক না। সুখেই তো আছি। কি দরকার সেই স্মৃতি মনে করে মিছেমিছি কষ্ট পাবার।
এখনও মনে হয় তোমাকে কাছে পেলে আবার ভোলাব,আবার নষ্ট করব,নতুন ছদ্মবেশ নিয়ে, নয়ত গুলি করে মারব! কারণ আমার যৌবনের কলঙ্কের তুমিই একমাত্র সাক্ষী।
ক্ষমা কোনদিনও চাইব না। ইচ্ছে হলে তুমি নিজেই ক্ষমা করো। তোমরা পুরুষরা তো আবার হৃদয়বান!!!
ইতি
রমা.....
দিলীপ পাগলা যে দিন মারা যায়, সেদিন তাঁর শার্টের পকেটে এই চিঠি টা পাওয়া গিয়েছিল।
__কাইয়ুম আকন্দ__
প্রিয়েষু দিলীপ,
কেমন আছ, যদিও ভাল নেই, তবুও এটাই চিঠি লেখার নিয়ম, তাই লিখলাম। এতদিন ভুলেই ছিলাম। আজ কি এক অজানা কারনে তোমাকে মনে পড়ল, তাই লিখলাম। হয়ত প্রায়শ্চিত্ত! আজ আমাদের মাঝে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিইবা বাকি আছে।
মনে পড়ে সেই বিশ বছর আগের কথা? ভরা যৌবন, উন্মাদ, কলেজ ক্যাম্পাস, কৃষ্ণ চত্ত্বর, কফি হাউস।
আমরা ক'জন বান্ধবী মিলে তোমাকে ঠকিয়েছিলাম। নায়িকা ছিলাম আমি। আসলে সেটা প্রতরণা ছিল না, ছিল যৌবন বয়সের এক উন্মাদ খেলা, নারী জাতীর রহস্য!
আসলে আমি বা আমরা কেউই তোমাকে ভালবাসি নি। এমন কি তোমার জন্য আমাদের বুকে কোন মমতা ও ছিল না।
কলেজে তুমি ছিলে সেরা ছাত্র। সব সময় পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে। চেহারা ছিল আকর্ষণীয়, বাবার টাকা ও ছিল প্রচুর। নিজেকে নিয়ে খুব অহংকার করতে, কোন মেয়েকে কখনও পাত্তা দিতে না। এসবের কারনেই তোমার প্রতি হিংসা জন্ম নিল। তোমাকে ভালবাসার ফাঁদে ফেলতে লাগলাম।
চেয়েছিলাম তোমাকে নষ্ট করে দিতে। তুমি যাতে লেখাপড়া শিখতে না পার, যেন ভবঘুরে হও, সবাই তোমাকে ঘৃণা করুক। নারী জাতীর জয় হোক!!
আমি, প্রতিমা, বেলা, গোধূলী, ক্লাসে সবাই তোমাকে আকর্ষণ করতাম। চেয়েছিলাম এদের মাঝে কাউকে তুমি বেছে নাও। ঠাকুর!! শেষ পর্যন্ত আমাকেই বেছে নিলে!
একদিন ধরাও দিলে, উন্মাদ হয়ে আমার কাছে ভালবাসার কথা বললে। উদাস হয়ে থাকতাম, যাতে তুমি আরও এগিয়ে আস।
আমাকে বিশ্বাস করেছ সে জন্য খুব চাপা হাসি হাসতাম। আমাকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে বলেছিলে: রমা তোমাকে না পেলে আমি মারা যাব। আমার জন্য কেউ মরতে পারে এ কথা ভাবতেই মনে শিহরন জাগে। হায়রে পুরুষ! জীবন কখনও জীবনের সমতুল্য হয় কি!
তারপর কলেজ ক্যাম্পাসে সারাদিন আড্ডা, পড়াশুনো ফেলে চলে আসতে। কাড়িকাড়ি টাকা খরচ করতে। আমরা কিন্তু ঠিকই লেখাপড়া চালিয়ে যেতাম, বোকা দিলিপ!
তোমাকে কাবু করতে কিন্তু কষ্ট হত না। কৃষ্ণ চত্বরে বসে হাতে হাত, চোখে চোখ, একটু মধুর কথা, ব্যস নেতিয়ে পড়তে। ভগবান যদি নারী কে দেহ শক্তি না দিত তবে নারী আরও অসহায় হত। প্রেম ভালবাসা আসলে সবই এ দেহ। বুঝি না নারী দেহের প্রতি কেন তোমাদের এত দূর্বলতা!
তোমাকে নিয়ে আমরা খুব মজা করতাম, ঠাঁয় রোদে দাঁড়িয়ে রাখতাম, আর ইচ্ছে করেই দেরি করে আসতাম।তারপর বলতাম সরি, ব্যস সব ঠান্ডা। তোমাকে জোকার সাজাতাম., বলতাম আমাকে যদি ভালবাস তবে পুকুর থেকে শাপলা এনে দাও। বোকার মত তুমি তাই করতে। ভীষন ভালো লাগত।
এরপর পাশাপাশি বসা, হাতে হাত, নির্জনে গল্প, আমিই তোমাকে প্রথম চুমু খাওয়া শেখালাম, আবেগে জড়িয়ে ধরতে, বাধা দিতাম না। নির্জন দুপুরে গাছের নিচে বসে যখন প্রেমের কথা বলতে তখন আমার খুব হাসি লাগত, কিন্তু চেপে যেতাম।
অনেক দিন কেটে গেল, দুই দুই বার পরীক্ষায় ফেল করলে। ছোটখাট নেশা ধরলে, দেহের টানে আমার কাছে আসতে লাগলে, তোমাকে নিচ থেকে নিচে নামাতে লাগলাম।লেখাপড়া প্রায় ছেড়েই দিলে।আমাদের কথা তোমার বাড়িতে জানতে পেয়ে তোমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিল। ভবঘুরে হয়ে গেলে,মদ ধরলে,ছিনতাই ও করলে টাকার জন্য।
মিথ্যা অভিমান করতাম, পরে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে, ভীষণ ভালো লাগত। আমাদের ইচ্ছে পূরণ হয়েছে, তুমি নষ্ট হয়েছ।
মাঝে মাঝে মনে হয় এভাবে বেঁচে আছ কেন?মরে গেলেই তো পার।মনে ক্লান্তি এল, তোমাকে অসহ্য বোঝা মনে হল, সরে আসতে লাগলাম। কিন্তু তুমি ছাড়লে না। তোমাকে দেখিয়ে অন্য জনের সাথে প্রেম করতাম, যাতে তুমি আত্মহত্যা করো।
তুমি ভবঘুরে মাতাল হয়েছ, তাতে আমাদের খুশি হবার কথা, তবুও কেন জানি পাপবোধ হয়! কাঁচা বয়স, কিইবা বুঝতাম বলো!
সেই প্রথম যৌবনের কৌতুকের জন্য এক সময় নিজেকে পাপী মনে হত। তোমার জন্য কোন মমতা আমাদের মনে ছিল না, ছিল ঘৃণা! অথচ তোমার পতনের জন্য আমরা প্রত্যেকেই দায়ী। দীর্ঘ দিন তোমার সাথে দেখা নেই। এখন দেখলে হয়ত চিনতেও পারব না। আমারও আগের মত আর রূপ নেই। এখন দেখলে আর আবেগে চেয়ে থাকবে না। বলো, সেই বয়স কি এখনও আছে!
আমাদের সবারই বিয়ে হয়ে গেছে। আমিও বিয়ে করে আজ প্রবাসী। সময় বড়ই নিষ্ঠুর।আজ তুমি কোথায় আর আমি কোথায়। শুধুই স্মৃতি! সে দিনের সেই কৌতুক এখন ঘৃণা, বেদনা! অথচ সেই বয়সে কোন পাপবোধই হত না।
সংসারের নানা ব্যস্ততারর মাঝে এখনও সেই কৃষ্ণচত্ত্বরের কথা মনে পড়ে। সেই কাঁচা বয়স, কলেজ ক্যাম্পাস, আড্ডা ভীষণ মনে পড়ে। আজ হয়ত সেখানে নতুন জুটি বাসা বেঁধেছে। মাঝে মাঝে মনে হয় কি দরকার ছিল সে দিনের সেই কৌতুকের! সে দিনের সেই কাচা বয়সের একটা কৌতুক এত দুঃখ বয়ে বেড়াবে কে জানত।আমার যৌবনের কলঙ্কের জন্য তুমিই দায়ী! তুমিই!
এই চল্লিশের শেষ অংকে তোমার সাথে দেখা হলে হেসে বলব, চিনতে পারছ কি? মনে রেখেছ এখনও? ভুলে যাও! এখন কি সেই বয়স আর আছে!
আমরা কি পাপ করেছি? কিসের পাপ! পাপ কি এতই সস্তা! কি দরকার তোমাকে ভেবে, জীবন যেভাবে চলছে চলুক না। সুখেই তো আছি। কি দরকার সেই স্মৃতি মনে করে মিছেমিছি কষ্ট পাবার।
এখনও মনে হয় তোমাকে কাছে পেলে আবার ভোলাব,আবার নষ্ট করব,নতুন ছদ্মবেশ নিয়ে, নয়ত গুলি করে মারব! কারণ আমার যৌবনের কলঙ্কের তুমিই একমাত্র সাক্ষী।
ক্ষমা কোনদিনও চাইব না। ইচ্ছে হলে তুমি নিজেই ক্ষমা করো। তোমরা পুরুষরা তো আবার হৃদয়বান!!!
ইতি
রমা.....
দিলীপ পাগলা যে দিন মারা যায়, সেদিন তাঁর শার্টের পকেটে এই চিঠি টা পাওয়া গিয়েছিল।
__কাইয়ুম আকন্দ__
No comments:
Post a Comment